welcome to skitto forum
a place for all things skitto

Skitto নিকালা টেসলা

Hasan390by: Hasan390
February 27, 2020 2:12AM
Member

অস্ট্রিয়ান সাম্রাজ্যে জন্ম ও বাসকারী টেসলা ১৮৭০ সালে প্রকৌশল এবং পদার্থবিজ্ঞানে পড়াশুনা করলেও সমাপ্ত করেননি এবং পরবর্তীতে ১৯৮০ সালের শুরুর দিকে তিনি নতুন বৈদ্যুতিক শক্তি শিল্পের টেলিফোনি, আর কন্টিনেন্টাল এডিসনে কাজের মাধ্যমে বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। ১৮৮৪ সালে তিনি নিউইয়র্কে স্থানান্তরিত হন এবং যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ত লাভ করেন। টেসলা সল্প সময়ের জন্য নিউ ইয়র্ক শহরের এর এডিসন মেশিন ওয়ার্কস এ কাজ করেন এবং পরবর্তীতে নিজ পরিচালনায় কাজ শুরু করেন। অর্থায়ন ও বিপণনে অংশীদারদের সহায়তায়, টেসলা নিউ ইয়র্কে গবেষণাগার স্থাপন করেন যেখানে তিনি বিভিন্ন বৈদ্যুতিক এবং যান্ত্রিক আবিষ্কার করেন। তিনি আবেশ মোটর এবং ট্রান্সফরমার এর অনুমোদন জর্জ ওয়াশিংটন হাউজ এর কাছ থেকে নিয়েছিলেন। তিনি তড়িৎ শক্তি উন্নয়ন এর জন্য অনেক কাজ করেন। তার কাজ এক কথায় তড়িৎ যুদ্ধ নামে পরিচিত। টেসলা তার উচ্চ ভোল্টেজ তড়িৎ এবং উচ্চ স্পন্দন এর পরীক্ষা করেন নিউইয়র্কে ও কলোরাডোতে। এরপর তিনি তারবিহীন যোগাযোগ ব্যবস্থা করেন। তিনি তার সকল ধারণা, প্রচেষ্টা ওয়ার্ডেনক্লিফ টাওয়ার-এ দেওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি তার গবেষণাগারে এক্স রশ্মি, তড়িৎ বিচ্ছিন্ন চার্জ নিয়ে গবেষণা করেন। তিনি একটি নৌকা বানান যা ছিল তারবিহীন। তিনি পরে সেটির প্রদর্শনী করেন। নিকোলা টেসলা তার খ্যাতি, সুনামের জন্য বেশ পরিচিত ছিলেন, তাকে অনেকে পাগল বিজ্ঞানী বলত। তার বিশেষ গুণাবলির জন্য তিনি প্রচুর অর্থ উপার্জন করেন এবং বেশীরভাগ অর্থ তার গবেষণাগার এর সফলতার জন্য ব্যবহার করেন। তিনি তার জীবনের বেশীরভাগ সময় নিউইয়র্কের একটি হোটেলে ছিলেন। তিনি ১৯৪৩ সালের ৭ জানুয়ারি মারা যান। তিনি মারা যাবার পর তার অসমাপ্ত কাজগুলো করতে বিজ্ঞানীদের অনেক সমস্যায় পরতে হয়। তার সম্মানার্থে ১৯৬০ সালে তড়িৎ ফ্লাক্স এর এস এই একক টেসলা করা হয়। জনপ্রিয় স্বার্থে ১৯৯০ সাল থেকে টেসলার মধ্যে পুনরূত্থান লক্ষ করা যায়।
১৮৮৬ সালে টেসলা প্রতিষ্ঠা করেন নিজ কোম্পানি টেসলা ইলেকট্রিক লাইট অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং। তবে বিনিয়োগকারীদের অনীহার কারণে প্রতিষ্ঠানটি বেশিদিন চালাতে পারেননি। এরপরই তিনি সাধারণ গবেষকের জীবনযাপন শুরু করেন। তৈরি করেন বিশেষ ধরনের এসি ইন্ডাকশন মোটর, নতুন ধরনের এক্স-রে। টেসলা ১৮৯৫ সালেই নিয়ে আসেন জেনারেটর। এর মধ্যে একবার টেসলার গবেষণাগার পুড়ে যায়। এজন্য একটি পেটেন্টও হাতছাড়া হয়ে যায় তার। পরে তার গবেষণা মোড় নেয় অন্যদিকে। একে একে পেটেন্টের তালিকায় যোগ হতে থাকে ইলেকট্রিক্যাল কনডেনসার, ট্রান্সফরমার, সার্কিট কন্ট্রোলার, মেথড অব সিগন্যালিং এবং গতিনির্দেশক যন্ত্র ছাড়াও আরো অনেক কিছু। মাঝে একবার রেডিওর পেটেন্ট নিয়ে মার্কোনির বিরুদ্ধেও মামলা করেন তিনি। ১৯০৯ সালে রেডিও আবিষ্কারের জন্য মার্কোনি নোবেল পান। কিন্তু তখন রেডিও প্রযুক্তির নৈপথ্যে টেসলা ও এডিসনের অবদান কেউ অস্বীকার করতে পারেনি। এজন্য ১৯১৫ সালে সম্ভাব্য নোবেল বিজয়ীর তালিকায় স্থান পেয়েছিলেন এই দু'জন।
শুরুর জীবন
নিকোলা টেসলা ১৮৫৬ সালের ১০ জুলাই সিমিলজান(বর্তমান ক্রোয়েশিয়া) নামক একটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা নাম মিলুতিন টেসলা(১৮১৯–১৮৭৯) পেশায় একজন ধর্মযাজক ছিলেন, আর মা ছিলেন ডুকা টেসলা (১৮২২-১৮৯২)। ডুকা টেসলার বাবা যিনি নিজেও ধর্মযাজক ছিলেন, বাসার জিনিসপত্র ও যন্ত্রপাতি বানাতে এবং সার্বিয়ান মহাকাব্য মুখস্ত রাখতে পারদর্শী ছিলেন। টেসলার মা ডুকা কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ করেননি। তবে টেসলা মনে করেন, তিনি তার অসাধারণ স্মৃতিশক্তি তার মায়ের কাছ থেকে বংশগতভাবে ও তার মায়ের পরিচর্যা ও প্রভাবে পেয়েছেন। টেসলার পূর্বপুরুষরা ছিলেন পশ্চিম সাইবেরিয়ান, মন্তিনিগ্রর এলাকার।
টেসলা তার বাবা মায়ের পাঁচ সন্তানের মধ্যে ৪র্থ। তার তিন বোন মিল্কা, আঞ্জেলিনা, মারিকা আর ভাই ডানে, যিনি এক ঘোড়া দৌড় প্রতিযোগিতায় মারা যায় যখন টেসলার বয়স ৫ বছর। টেসলা ১৮৬১ সালে সিমিলজানে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যান, যেখানে তিনি জার্মান, গণিত আর ধর্ম শেখেন। ১৮৬২ সালে তার পরিবার গোসপিক এ যায়, যেখানে তার বাবা ধর্মযাজক হিসেবে কাজ করত। টেসলা তার প্রাথমিক শিক্ষা ও সাধারণ শিক্ষা শেষ করেন। ১৮৭০ সালে তিনি উত্তরের কারলোভাকে যান উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে। সেখানে জার্মান ভাষায় শিক্ষা দেয়া হতো।
টেসলা পরবর্তীতে জানান তিনি একজন পদারথবিজ্ঞানের অধ্যাপকের দারা তড়িৎ প্রদর্শনীতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। টেসলা বলেন, এসব রহস্যময় ঘটনাগুলোর প্রদর্শনীই তাকে বিদুৎ এর মত এই অসাধারন শক্তি সম্পর্কে জানতে আগ্রহী করে তুলেছিল। টেসলা মনেমনে ক্যালকুলাসের যেসব সমাধান করতে পারতেন, তা দেখে তার শিক্ষকদের মনে সন্দেহ আর বিশ্বয় সৃষ্টি করেছিল। ১৮৭৩ সালে তিনি তার ৪ বছরের বিদ্যালয় মাত্র ৩ বছরে শেষ করেন।
১৮৭৪ সালে তিনি অস্ট্রিয়-হাঙ্গেরির সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। তিনি শিকারি পর্বত অন্বেষণ করেন। তিনি বলতেন, প্রকৃতি তাকে মানসিক এবং শারীরিকভাবে শক্তিশালী করেছে। তিনি টোমিনগাজ এ থাকাকালীন অনেক বই পড়েন। পরে তিনি বলেন যে, মার্ক টোয়েন এরসাথে কাজ করায় তার প্রাথমিক অসুস্থতা দূর হয়েছিলো। ১৮৭৫ সালে নিকোলা টেসলা অস্ট্রিয়ার গারাজে সেনাবাহিনীর একটি বৃত্তি লাভ করেন।তিনি প্রথম বছর কোন ক্লাস বাদ দেননি এবং সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে ৯ টি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি সাইবেরিয়ান একটি সংস্কৃতি ক্লাব এ যোগদান করেন। তার বিজ্ঞান বিভাগের প্রধানের কাছ হতে তার বাবার কাছে একটি চিঠি যায়। সেখানে লিখা ছিল, আপনার ছেলে মেধাতালিকায় প্রথম। টেসলা বলেন যে, তিনি রবিবার এবং ছুটির দিন ছাড়া অন্য সব দিন ভোর ৩ টা হতে রাত ১১ টা পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। তিনি তার বাবার কাছ থেকে কঠোর পরিশ্রম করার অনুপ্রেরণা পেতেন। ১৮৭৯ সালে তার বাবার মৃত্যুর পর তার প্রফেসার এর কাছ থেকে তার বাবার চিঠি পান। সেখানে লিখা ছিল অতিরিক্ত পরিশ্রম করলে টেসলা মারা যেতে পারে। যদি টেসলা অতিরিক্ত পরিশ্রম করে তবে তাকে যেন বিদ্যালয় থেকে বের করে দেয়া হয়। সেই সময় ২য় বর্ষে থাকাকালীন তিনি তার শিক্ষক গ্রামে ডাইনামো দারা প্রভাবিত হন। তিনি ২য় বর্ষের পর তার বৃত্তি হারান কারণ তিনি জুয়া খেলায় আসক্ত হয়ে পড়েন। ৩য় বর্ষে তিনি ভর্তি, সুবিধাসহ সকল সুবিধা হারান।এরপর তিনি সব ছেড়ে তার পরিবার এর কাছে ফিরে যান। তিনি বলেছিলেন, তার আবেগ আগে ও পরে সব সমান ছিল।পরবর্তীতে তিনি আমারিকাতে বিলিয়ার্ড খেলায় বেশ সুনাম অর্জন করেন। যখন পরীক্ষা চলে আসে তখন তিনি পরীক্ষার জন্য তৈরি ছিলেন না। তিনি পড়ালেখা করতে অস্বীকার করেন। তিনি তার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষ বর্ষে কোন নম্বর পাননি। ১৮৭৮ সালে তিনি তার পরিবারের সাথে সব কিছু গোপন রেখে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে দেন। এরপর তিনি মারিবর চলে যান। যেখানে তিনি মাসে মাত্র ৬০ ফ্লরিন এর জন্য কাজ করতে থাকেন। তিনি তার সময় রাস্তার মানুষের সাথে কার্ড খেলে পার করতেন। ১৮৭৯ সালে তার বাবা মালটিন মারিবর যান তাকে বাসায় নিয়ে আসার জন্য কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। সেই তিনি রোগে ভুগছিলেন।১৮৭৯ সালের ২৪ জানুয়ারি তিনি গোসপিক ফিরে আসেন। ১৮৭৯ সালের ১৭ এপ্রিল তার বাবা মারা যান। তখন তিনি গোসপিক বিশ্ববিদ্যালয় এর সবচাইতে বয়স্ক ছাত্র। ১৮৮০ সালে তিনি তার দুই চাচার কাছ থেকে টাকা নিয়ে গোসপিক ত্যাগ করে প্রাগে আসেন পড়ালেখা করার জন্য কিন্তু তিনি অনেক দেরি করে ফেলেন। তিনি কখনও গ্রিক ভাষা শিখেননি এবং চেক ভাষাও জানতেন না। তাই এসব বিষয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় হতে কোন নম্বর পান নি। ১৮৮১ সালে টেসলা বুদাপেস্ট এর একটি কোম্পানিতে কাজ শুরু করেন।তিনি বুঝতে পারেন যে তার এই কোম্পানি নির্মাণাধীন, তাই তিনি কঠোর পরিশ্রম করতে থাকেন। কয়েক মাসের মধ্যেই তার কোম্পানি বুদাপেস্ট এর অন্যতম কোম্পানিতে পরিণত হন এবং তিনি ছিলেন তার প্রধান ইলেক্ট্রিশিয়ান। তিনি সেখানে চাকরি করার সময় কোম্পানির যে উন্নতি হয় তা পরবর্তীতে আর কেউ করতে পারে নি।
এডিসন এর সাথে কাজ
১৮৮২ সালে ফ্রান্সে তিনি এডিসন এর কোম্পানিতে কাজ শুরু করেন। ১৮৮৪ সালে তিনি এডিসনের নিউইয়র্কের কোম্পানিতে যন্ত্রের কাজে আসেন। তিনি তার প্রাথমিক জীবন তড়িৎ প্রকৌশল হিসাবে শুরু করেন এবং দ্রুত অনেক কঠিন সমস্যার সমাধান করেন[৭][৮] । এডিসন এর কোম্পানি থেকে তাকে সরাসরি তড়িৎ জেনারেটর এর ডিজাইন বানানোর প্রস্তাব দেয়া হয়। ১৮৮৫ সালে তিনি দাবি করেন যে তিনি এডিসন এর কোম্পানির অপর্যাপ্ত মোটর, জেনারেটর এর ডিজাইন করে উন্নত করতে পারবেন যা আর্থিক এবং ব্যবসায়িক উভয় দিক থেকে লাভবান হবে। এডিসন তখন তাকে বলেন যে, যদি তুমি তা করতে পার তাহলে ৫০,০০০ ডলার দেব তোমাকে। তিনি তার কাজ শেষ করেন এবং তার টাকা চান। কিন্তু এডিসন তার জবাবে বলেন যে, তিনি মজা করেছিলেন আর টেসলা আমেরিকার রসিকতা বুঝতে পারে নি।পরবর্তীতে, এডিসন টেসলার জন্য সপ্তাহে ১০ ডলার থেকে ১৮ ডলার করে বেতন বাড়ানোর প্রস্তাব করেন। কিন্তু টেসলা তা প্রত্যাখ্যান করেন এবং পদত্যাগ করেন।
মধ্যবর্তী জীবন
টেসলা এডিসন এর কোম্পানি ছাড়ার পর ১৮৮৬ সালে দুজন ব্যবসায়ির সাথে যোগ দেন। তারা হলেন রবার্ট লেন এবং বেঞ্জামিন ডালে। যারা তার তড়িৎ বাল্ব ও কারখানার জন্য আর্থিক সাহায্য করতে সম্মত হয়। আলোর ব্যবহার এর ডিজাইন এর উপর ভিত্তি করে নিকোলা টেসলা প্রথম তড়িৎ বাতি তৈরি করেন এবং তিনি ডাইনামিক যন্ত্রের ডিজাইন করেছিলেন যা ছিল আমেরিকার প্রথম ডিজাইন। কিন্তু বিনিয়োগকারীরা নিকোলা টেসলার নতুন ধরনের মোটর এবং বাতির প্রতি তেমন আগ্রহ দেখায় নি। তারা মনে করেছিল যে, তড়িৎ উন্নয়নের চাইতে অন্য কিছু উন্নত করলে ভাল হবে। তারা টেসলাকে টাকা-পয়সা ছাড়াই কোম্পানি থেকে বের করে দিতে চান। টেসলা তার প্রায় সকল ক্ষমতাই হারাতে থাকেন কোম্পানি থেকে। এমন কি তড়িৎ মেরামত এর কাজ মাত্র ২ ডলার এর বিনিময়ে করেন। ১৮৮৬-৮৭ সালের শীতের সময় টেসলা মাথা এবং চোখ এর সমস্যার জন্য অনেক দিন অসুস্থ ছিলেন।


  • AZHARMAMUDby: AZHARMAMUD

    Member

    Nice
  • AZHARMAMUDby: AZHARMAMUD

    Member

    Hasan390 said:
    অস্ট্রিয়ান সাম্রাজ্যে জন্ম ও বাসকারী টেসলা ১৮৭০ সালে প্রকৌশল এবং পদার্থবিজ্ঞানে পড়াশুনা করলেও সমাপ্ত করেননি এবং পরবর্তীতে ১৯৮০ সালের শুরুর দিকে তিনি নতুন বৈদ্যুতিক শক্তি শিল্পের টেলিফোনি, আর কন্টিনেন্টাল এডিসনে কাজের মাধ্যমে বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। ১৮৮৪ সালে তিনি নিউইয়র্কে স্থানান্তরিত হন এবং যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ত লাভ করেন। টেসলা সল্প সময়ের জন্য নিউ ইয়র্ক শহরের এর এডিসন মেশিন ওয়ার্কস এ কাজ করেন এবং পরবর্তীতে নিজ পরিচালনায় কাজ শুরু করেন। অর্থায়ন ও বিপণনে অংশীদারদের সহায়তায়, টেসলা নিউ ইয়র্কে গবেষণাগার স্থাপন করেন যেখানে তিনি বিভিন্ন বৈদ্যুতিক এবং যান্ত্রিক আবিষ্কার করেন। তিনি আবেশ মোটর এবং ট্রান্সফরমার এর অনুমোদন জর্জ ওয়াশিংটন হাউজ এর কাছ থেকে নিয়েছিলেন। তিনি তড়িৎ শক্তি উন্নয়ন এর জন্য অনেক কাজ করেন। তার কাজ এক কথায় তড়িৎ যুদ্ধ নামে পরিচিত। টেসলা তার উচ্চ ভোল্টেজ তড়িৎ এবং উচ্চ স্পন্দন এর পরীক্ষা করেন নিউইয়র্কে ও কলোরাডোতে। এরপর তিনি তারবিহীন যোগাযোগ ব্যবস্থা করেন। তিনি তার সকল ধারণা, প্রচেষ্টা ওয়ার্ডেনক্লিফ টাওয়ার-এ দেওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি তার গবেষণাগারে এক্স রশ্মি, তড়িৎ বিচ্ছিন্ন চার্জ নিয়ে গবেষণা করেন। তিনি একটি নৌকা বানান যা ছিল তারবিহীন। তিনি পরে সেটির প্রদর্শনী করেন। নিকোলা টেসলা তার খ্যাতি, সুনামের জন্য বেশ পরিচিত ছিলেন, তাকে অনেকে পাগল বিজ্ঞানী বলত। তার বিশেষ গুণাবলির জন্য তিনি প্রচুর অর্থ উপার্জন করেন এবং বেশীরভাগ অর্থ তার গবেষণাগার এর সফলতার জন্য ব্যবহার করেন। তিনি তার জীবনের বেশীরভাগ সময় নিউইয়র্কের একটি হোটেলে ছিলেন। তিনি ১৯৪৩ সালের ৭ জানুয়ারি মারা যান। তিনি মারা যাবার পর তার অসমাপ্ত কাজগুলো করতে বিজ্ঞানীদের অনেক সমস্যায় পরতে হয়। তার সম্মানার্থে ১৯৬০ সালে তড়িৎ ফ্লাক্স এর এস এই একক টেসলা করা হয়। জনপ্রিয় স্বার্থে ১৯৯০ সাল থেকে টেসলার মধ্যে পুনরূত্থান লক্ষ করা যায়।
    ১৮৮৬ সালে টেসলা প্রতিষ্ঠা করেন নিজ কোম্পানি টেসলা ইলেকট্রিক লাইট অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং। তবে বিনিয়োগকারীদের অনীহার কারণে প্রতিষ্ঠানটি বেশিদিন চালাতে পারেননি। এরপরই তিনি সাধারণ গবেষকের জীবনযাপন শুরু করেন। তৈরি করেন বিশেষ ধরনের এসি ইন্ডাকশন মোটর, নতুন ধরনের এক্স-রে। টেসলা ১৮৯৫ সালেই নিয়ে আসেন জেনারেটর। এর মধ্যে একবার টেসলার গবেষণাগার পুড়ে যায়। এজন্য একটি পেটেন্টও হাতছাড়া হয়ে যায় তার। পরে তার গবেষণা মোড় নেয় অন্যদিকে। একে একে পেটেন্টের তালিকায় যোগ হতে থাকে ইলেকট্রিক্যাল কনডেনসার, ট্রান্সফরমার, সার্কিট কন্ট্রোলার, মেথড অব সিগন্যালিং এবং গতিনির্দেশক যন্ত্র ছাড়াও আরো অনেক কিছু। মাঝে একবার রেডিওর পেটেন্ট নিয়ে মার্কোনির বিরুদ্ধেও মামলা করেন তিনি। ১৯০৯ সালে রেডিও আবিষ্কারের জন্য মার্কোনি নোবেল পান। কিন্তু তখন রেডিও প্রযুক্তির নৈপথ্যে টেসলা ও এডিসনের অবদান কেউ অস্বীকার করতে পারেনি। এজন্য ১৯১৫ সালে সম্ভাব্য নোবেল বিজয়ীর তালিকায় স্থান পেয়েছিলেন এই দু'জন।
    শুরুর জীবন
    নিকোলা টেসলা ১৮৫৬ সালের ১০ জুলাই সিমিলজান(বর্তমান ক্রোয়েশিয়া) নামক একটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা নাম মিলুতিন টেসলা(১৮১৯–১৮৭৯) পেশায় একজন ধর্মযাজক ছিলেন, আর মা ছিলেন ডুকা টেসলা (১৮২২-১৮৯২)। ডুকা টেসলার বাবা যিনি নিজেও ধর্মযাজক ছিলেন, বাসার জিনিসপত্র ও যন্ত্রপাতি বানাতে এবং সার্বিয়ান মহাকাব্য মুখস্ত রাখতে পারদর্শী ছিলেন। টেসলার মা ডুকা কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ করেননি। তবে টেসলা মনে করেন, তিনি তার অসাধারণ স্মৃতিশক্তি তার মায়ের কাছ থেকে বংশগতভাবে ও তার মায়ের পরিচর্যা ও প্রভাবে পেয়েছেন। টেসলার পূর্বপুরুষরা ছিলেন পশ্চিম সাইবেরিয়ান, মন্তিনিগ্রর এলাকার।
    টেসলা তার বাবা মায়ের পাঁচ সন্তানের মধ্যে ৪র্থ। তার তিন বোন মিল্কা, আঞ্জেলিনা, মারিকা আর ভাই ডানে, যিনি এক ঘোড়া দৌড় প্রতিযোগিতায় মারা যায় যখন টেসলার বয়স ৫ বছর। টেসলা ১৮৬১ সালে সিমিলজানে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যান, যেখানে তিনি জার্মান, গণিত আর ধর্ম শেখেন। ১৮৬২ সালে তার পরিবার গোসপিক এ যায়, যেখানে তার বাবা ধর্মযাজক হিসেবে কাজ করত। টেসলা তার প্রাথমিক শিক্ষা ও সাধারণ শিক্ষা শেষ করেন। ১৮৭০ সালে তিনি উত্তরের কারলোভাকে যান উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে। সেখানে জার্মান ভাষায় শিক্ষা দেয়া হতো।
    টেসলা পরবর্তীতে জানান তিনি একজন পদারথবিজ্ঞানের অধ্যাপকের দারা তড়িৎ প্রদর্শনীতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। টেসলা বলেন, এসব রহস্যময় ঘটনাগুলোর প্রদর্শনীই তাকে বিদুৎ এর মত এই অসাধারন শক্তি সম্পর্কে জানতে আগ্রহী করে তুলেছিল। টেসলা মনেমনে ক্যালকুলাসের যেসব সমাধান করতে পারতেন, তা দেখে তার শিক্ষকদের মনে সন্দেহ আর বিশ্বয় সৃষ্টি করেছিল। ১৮৭৩ সালে তিনি তার ৪ বছরের বিদ্যালয় মাত্র ৩ বছরে শেষ করেন।
    ১৮৭৪ সালে তিনি অস্ট্রিয়-হাঙ্গেরির সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। তিনি শিকারি পর্বত অন্বেষণ করেন। তিনি বলতেন, প্রকৃতি তাকে মানসিক এবং শারীরিকভাবে শক্তিশালী করেছে। তিনি টোমিনগাজ এ থাকাকালীন অনেক বই পড়েন। পরে তিনি বলেন যে, মার্ক টোয়েন এরসাথে কাজ করায় তার প্রাথমিক অসুস্থতা দূর হয়েছিলো। ১৮৭৫ সালে নিকোলা টেসলা অস্ট্রিয়ার গারাজে সেনাবাহিনীর একটি বৃত্তি লাভ করেন।তিনি প্রথম বছর কোন ক্লাস বাদ দেননি এবং সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে ৯ টি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি সাইবেরিয়ান একটি সংস্কৃতি ক্লাব এ যোগদান করেন। তার বিজ্ঞান বিভাগের প্রধানের কাছ হতে তার বাবার কাছে একটি চিঠি যায়। সেখানে লিখা ছিল, আপনার ছেলে মেধাতালিকায় প্রথম। টেসলা বলেন যে, তিনি রবিবার এবং ছুটির দিন ছাড়া অন্য সব দিন ভোর ৩ টা হতে রাত ১১ টা পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। তিনি তার বাবার কাছ থেকে কঠোর পরিশ্রম করার অনুপ্রেরণা পেতেন। ১৮৭৯ সালে তার বাবার মৃত্যুর পর তার প্রফেসার এর কাছ থেকে তার বাবার চিঠি পান। সেখানে লিখা ছিল অতিরিক্ত পরিশ্রম করলে টেসলা মারা যেতে পারে। যদি টেসলা অতিরিক্ত পরিশ্রম করে তবে তাকে যেন বিদ্যালয় থেকে বের করে দেয়া হয়। সেই সময় ২য় বর্ষে থাকাকালীন তিনি তার শিক্ষক গ্রামে ডাইনামো দারা প্রভাবিত হন। তিনি ২য় বর্ষের পর তার বৃত্তি হারান কারণ তিনি জুয়া খেলায় আসক্ত হয়ে পড়েন। ৩য় বর্ষে তিনি ভর্তি, সুবিধাসহ সকল সুবিধা হারান।এরপর তিনি সব ছেড়ে তার পরিবার এর কাছে ফিরে যান। তিনি বলেছিলেন, তার আবেগ আগে ও পরে সব সমান ছিল।পরবর্তীতে তিনি আমারিকাতে বিলিয়ার্ড খেলায় বেশ সুনাম অর্জন করেন। যখন পরীক্ষা চলে আসে তখন তিনি পরীক্ষার জন্য তৈরি ছিলেন না। তিনি পড়ালেখা করতে অস্বীকার করেন। তিনি তার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষ বর্ষে কোন নম্বর পাননি। ১৮৭৮ সালে তিনি তার পরিবারের সাথে সব কিছু গোপন রেখে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে দেন। এরপর তিনি মারিবর চলে যান। যেখানে তিনি মাসে মাত্র ৬০ ফ্লরিন এর জন্য কাজ করতে থাকেন। তিনি তার সময় রাস্তার মানুষের সাথে কার্ড খেলে পার করতেন। ১৮৭৯ সালে তার বাবা মালটিন মারিবর যান তাকে বাসায় নিয়ে আসার জন্য কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। সেই তিনি রোগে ভুগছিলেন।১৮৭৯ সালের ২৪ জানুয়ারি তিনি গোসপিক ফিরে আসেন। ১৮৭৯ সালের ১৭ এপ্রিল তার বাবা মারা যান। তখন তিনি গোসপিক বিশ্ববিদ্যালয় এর সবচাইতে বয়স্ক ছাত্র। ১৮৮০ সালে তিনি তার দুই চাচার কাছ থেকে টাকা নিয়ে গোসপিক ত্যাগ করে প্রাগে আসেন পড়ালেখা করার জন্য কিন্তু তিনি অনেক দেরি করে ফেলেন। তিনি কখনও গ্রিক ভাষা শিখেননি এবং চেক ভাষাও জানতেন না। তাই এসব বিষয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় হতে কোন নম্বর পান নি। ১৮৮১ সালে টেসলা বুদাপেস্ট এর একটি কোম্পানিতে কাজ শুরু করেন।তিনি বুঝতে পারেন যে তার এই কোম্পানি নির্মাণাধীন, তাই তিনি কঠোর পরিশ্রম করতে থাকেন। কয়েক মাসের মধ্যেই তার কোম্পানি বুদাপেস্ট এর অন্যতম কোম্পানিতে পরিণত হন এবং তিনি ছিলেন তার প্রধান ইলেক্ট্রিশিয়ান। তিনি সেখানে চাকরি করার সময় কোম্পানির যে উন্নতি হয় তা পরবর্তীতে আর কেউ করতে পারে নি।
    এডিসন এর সাথে কাজ
    ১৮৮২ সালে ফ্রান্সে তিনি এডিসন এর কোম্পানিতে কাজ শুরু করেন। ১৮৮৪ সালে তিনি এডিসনের নিউইয়র্কের কোম্পানিতে যন্ত্রের কাজে আসেন। তিনি তার প্রাথমিক জীবন তড়িৎ প্রকৌশল হিসাবে শুরু করেন এবং দ্রুত অনেক কঠিন সমস্যার সমাধান করেন[৭][৮] । এডিসন এর কোম্পানি থেকে তাকে সরাসরি তড়িৎ জেনারেটর এর ডিজাইন বানানোর প্রস্তাব দেয়া হয়। ১৮৮৫ সালে তিনি দাবি করেন যে তিনি এডিসন এর কোম্পানির অপর্যাপ্ত মোটর, জেনারেটর এর ডিজাইন করে উন্নত করতে পারবেন যা আর্থিক এবং ব্যবসায়িক উভয় দিক থেকে লাভবান হবে। এডিসন তখন তাকে বলেন যে, যদি তুমি তা করতে পার তাহলে ৫০,০০০ ডলার দেব তোমাকে। তিনি তার কাজ শেষ করেন এবং তার টাকা চান। কিন্তু এডিসন তার জবাবে বলেন যে, তিনি মজা করেছিলেন আর টেসলা আমেরিকার রসিকতা বুঝতে পারে নি।পরবর্তীতে, এডিসন টেসলার জন্য সপ্তাহে ১০ ডলার থেকে ১৮ ডলার করে বেতন বাড়ানোর প্রস্তাব করেন। কিন্তু টেসলা তা প্রত্যাখ্যান করেন এবং পদত্যাগ করেন।
    মধ্যবর্তী জীবন
    টেসলা এডিসন এর কোম্পানি ছাড়ার পর ১৮৮৬ সালে দুজন ব্যবসায়ির সাথে যোগ দেন। তারা হলেন রবার্ট লেন এবং বেঞ্জামিন ডালে। যারা তার তড়িৎ বাল্ব ও কারখানার জন্য আর্থিক সাহায্য করতে সম্মত হয়। আলোর ব্যবহার এর ডিজাইন এর উপর ভিত্তি করে নিকোলা টেসলা প্রথম তড়িৎ বাতি তৈরি করেন এবং তিনি ডাইনামিক যন্ত্রের ডিজাইন করেছিলেন যা ছিল আমেরিকার প্রথম ডিজাইন। কিন্তু বিনিয়োগকারীরা নিকোলা টেসলার নতুন ধরনের মোটর এবং বাতির প্রতি তেমন আগ্রহ দেখায় নি। তারা মনে করেছিল যে, তড়িৎ উন্নয়নের চাইতে অন্য কিছু উন্নত করলে ভাল হবে। তারা টেসলাকে টাকা-পয়সা ছাড়াই কোম্পানি থেকে বের করে দিতে চান। টেসলা তার প্রায় সকল ক্ষমতাই হারাতে থাকেন কোম্পানি থেকে। এমন কি তড়িৎ মেরামত এর কাজ মাত্র ২ ডলার এর বিনিময়ে করেন। ১৮৮৬-৮৭ সালের শীতের সময় টেসলা মাথা এবং চোখ এর সমস্যার জন্য অনেক দিন অসুস্থ ছিলেন।

    Good 
  • shanto600570by: shanto600570

    Member

    oh vai,,,