চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায়, সংক্রমণ বলতে পোষক জীবের দেহকোষে রোগ সৃষ্টিকারী সংঘটকের অনুপ্রবেশ, আক্রমণ, সংখ্যাবৃদ্ধির মাধ্যমে বিক্রিয়া এবং উৎপন্ন বিষক্রিয়াকে বোঝায়। আর এভাবে সংক্রমণের ফলে সৃষ্ট রোগকে সংক্রামক বা ছোঁয়াচে রোগ বলে।
ভাইরাস, ভিরয়েড, প্রিয়ন, ব্যাকটেরিয়া, নেমাটোড, পিঁপড়া, আর্থ্রোপড ও বিভিন্ন প্রকার ছত্রাক দ্বারা এ সমস্ত রোগ সংঘটিত হয়। আর চিকিৎসাবিজ্ঞানের যে শাখা সংক্রমণ নিয়ে গবেষণা করে, তাকে সংক্রামক রোগতত্ত্ব বলা হয়।
এবার চলুন জেনে আসি মানব ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ংকর ৫টি ছোঁয়াচে বা সংক্রামক রোগ সম্পর্কে। আর শুরু করছি আপনার, আমার সবার পরিচিতি সবচেয়ে ভয়াবহ সংক্রামক ব্যাধিটি দিয়ে…
কভিড-১৯
প্রাণঘাতী কভিড-১৯ বা করোনার নাম তালিকায় শুরুতে দেখে বিস্মিত হচ্ছেন কি? তাহলে আপনার অবগতির জন্য বলে রাখি ভয়ংকর এই ছোঁয়াচে ব্যাধী এখনো পর্যন্ত কেড়ে নিয়েছে ২ লক্ষ ২৮ হাজারের বেশি প্রাণ। এখনো পর্যন্ত এর সংক্রমণ থামানোর মতো কার্যকর কোন পদক্ষেপ নিতে পারছে না বিশ্ব।
আর তাই এই মৃত্যু খেলা কবে শেষ হবে, আর কতো প্রাণ নিয়ে ক্ষান্ত হবে প্রাণঘাতী করোনা তা এখনো পর্যন্ত বলতে পারছে না বিশেষজ্ঞরা।
প্লেগ
রোমান সাম্রাজ্যের জাস্টিনিয়ানে ৫৪১খ্রিস্টাব্দে প্লেগ রোগ ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় দুই শতাব্দী ধরে এই মরণব্যাধী রোগটির সংক্রমণ থাকে মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া ও ভূমধ্যসাগরীয় এলাকায় জুড়ে। এখনো পর্যন্ত মানব ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ংকর সংক্রামক ব্যাধী ধরা হয় প্লেগকে। গত দুই শত বৎসরে ব্যাকটেরিয়া ঘটিত এই রোগটিতে মারা যায়, প্রায় ১০ কোটি মানুষ।
জলাতঙ্ক
রেবিজ ভাইরাস নিউরোট্রপিক অর্থাৎ এটি প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে ছড়ায়। এ ভাইরাসের সংক্রমণে যে রোগটি হয়, তার নাম জলাতঙ্ক। প্যারিসের পাস্তুর ইনস্টিটিউটের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রতিবছর পুরো পৃথিবীতে জলাতঙ্কের আক্রমণে প্রাণ হারায় ৫৯ হাজার মানুষ। সংক্রামিত প্রাণীর লালায় রেবিজ বা জলাতঙ্ক রোগের ভাইরাস বিচরণ করে।
মস্তিষ্কে রেবিজ ভাইরাস যখন ছড়িয়ে পড়ে, তখনই রেবিজের লক্ষণগুলো দেখা দিতে থাকে। লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার তিন থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে তীব্র খিঁচুনি ও পক্ষাঘাতে রোগীর মৃত্যু হয়।
গুটি বসন্ত
গুটি বসন্তের সাথে আমরা কম বেশি সবাই পরিচিত। এখন আর ছোঁয়াচে এই ব্যাধিটি নিয়ে কেউ ভীত হয় না। আর এই অবদান হল চিকিৎসা বিজ্ঞানের।
সতের শতকের শুরুতে ইউরোপের দেশ ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও নেদারল্যান্ডসেও এই রোগ ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যেও এক সময় স্পলপক্সের সংক্রমণ ঘটেছিল।
এর বাইরে বিভিন্ন সময়ে আরও অসংখ্য দেশে মরণব্যাধী এই সংক্রামক রোগটির বিস্তার লাভ করেছিল। আর এতে করে এখনো পর্যন্ত প্রায় ২ কোটি মানুষ মারা যায় বলে, দাবি করেন ইতিহাসবিদরা।
ইবোলা
করোনার আগে মানব ইতিহাসে সবচেয়ে সংক্রামক হিসেবে গণ্য হতো ইবোলা। এখন পর্যন্ত এর ছয়টি প্রকরণ শনাক্ত হয়েছে। সংক্রমণে মৃত্যুর হার ২৫ শতাংশ থেকে ৯০ শতাংশের বেশি।
আজ পর্যন্ত এ ভাইরাসের কোনো কার্যকর প্রতিষেধক তৈরি করা যায়নি। ইবোলা ভাইরাস সংক্রামিত মানুষের রক্ত, লালা বা যেকোনো নিঃসৃত রস থেকে। শরীরের ক্ষতস্থানের মাধ্যমেও অপরের শরীরে সংক্রামিত হয়ে থাকে ভয়াবহ ইবোলা।
এখানে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসকে শুরুতে রাখা হয়েছে কারণ এর আগে কোন ভাইরাস এমন বৈশ্বিক পরিসরে সংক্রমণ ছড়াতে পারেনি। মানব সভ্যতায় জ্ঞান বিজ্ঞানের উন্নতির সাথে সাথে উন্নতি হয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থায়। আর এতে করে এই ছোঁয়াচে ব্যাধীটি খুব স্বল্প সময়ে দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে পুরো বিশ্বে।
প্রযুক্তির সহায়তায় ছয় বছর আগে মৃত মেয়ের সঙ্গে মায়ের সাক্ষাতের আয়োজন করেছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার তথ্যপ্রযুক্তিবিদরা। সম্প্রতি আয়োজন করা মৃত মেয়ে ও মায়ের কথোপকথন এবং আদরের হৃদয়বিদারক একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে।-খবর আরব নিউজের।
আরব নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৬ সালে লিউকোমিয়ায় মারা যাওয়া ছোট্ট শিশু না-ইয়নকে প্রযুক্তির মাধ্যমে বাস্তবতায় মায়ের সামনে আনা হয়। সেখানে মা ঝাং জি সাং মেয়ের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি আদর করেন। এ সময় মৃত মেয়েকে পেয়ে অঝোরে কাঁদতে থাকেন মা।
দক্ষিণ কোরিয়ার একটি টেলিভিশনে এ ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ভিডিও প্রচার করে। ভিডিওতে দেখা যায়, একটি গ্রিন স্ক্রিন কক্ষে মা ঝাং জি ভিআর বক্স ও গ্লাভস পরে মেয়েকে ডাকছেন। এ সময় ভার্চুয়ালি মা দেখতে পান, তার ডাক শুনে মৃত মেয়ে কয়েকটি পাথরের টুকরোর পাশ থেকে দৌড়ে আসে। এ সময় মেয়ে বলে, ‘মা, তুমি কোথায় ছিলে? তোমাকে আমার খুব মনে পড়ে। আমাকে তোমার মনে পড়ে?’ এমন প্রশ্নের উত্তর দেয়ার আগেই বাস্তবে কেঁদে ফেলেন মা। প্রতিত্তোরে মা বলেন, তোমাকে আমার খুব মনে পড়ে। ওই সময় মেয়েকে ছুঁয়ে আদর করেন ওই মা। এমন হৃদয়বিদারক দৃশ্য দেখে উপস্থিত প্রযুক্তিবিদরাও কেঁদে ফেলেন।
প্রযুক্তিবিদরা জানিয়েছেন, প্রথমে না-ইয়ানের ছবি নিয়ে এনিমেশন তৈরি করা হয়। পরে সেই এনিমেশনকে ভিআর বক্স ও সেন্সর হ্যান্ড গ্লাভসে সংযুক্ত করা হয়।
Member
Member
Member
Member
Hello
Member
হাই
Member
????